আসমান-জমিনের মধ্যবর্তী স্থান সওয়াবে পূর্ণ হয় যে জিকিরে

আল্লাহর প্রশংসা ও জিকিরের মর্যাদা অনেক বেশি। নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জিকিরের প্রতি তাঁর ভালোবাসা এবং পছন্দ-অপছন্দের বিষয়গুলো হাদিসে পাকে সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন। জিকিরের প্রতি ভালোবাসা সম্পর্কে নবিজী কী বলেছেন?

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘
لأَنْ أَقُولَ سُبْحَانَ اللَّهِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ وَلا إِلَهَ إِلا اللَّهُ وَاللَّهُ أَكْبَرُ أَحَبُّ إِلَيَّ مِمَّا طَلَعَتْ عَلَيْهِ الشَّمْسُ
‘আমি ‘সুবহানাল্লাহ’, ‘আল-হামদুলিল্লাহ’, ‘লা- ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এবং ‘আল্লাহু আকবার’ বলতে এত বেশি পছন্দ করি যে, এগুলো বলা আমার কাছে পৃথিবীর বুকে সূর্যের নিচে যা কিছু আছে; সবকিছু থেকে বেশি প্রিয়।’ (মুসলিম)

যদি কেউ শুধু সুবহানাল্লাহ এবং আলহামদুল্লিাহ জিকির করে; তা তার জন্য আসমান এবংজমিনের মধ্যবর্তী স্থান সওয়াবে পরিপূর্ণ হয়ে যায়। হাদিসে পাকে প্রিয় নবি এ সম্পর্কে ঘোষণা করেছেন-
হজরত আবু মালিক হারেছ ইবনে আছেম আশআরি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, পবিত্রতা ঈমানের অর্ধেক। আর আলহামদুলিল্লাহ (الْحَمْدُ لِلَّهِ) ওজন দণ্ডের পরিমাপককে পরিপূর্ণ করে দেবে। আর সুবহানাল্লাহ (سُبْحَانَ اللَّهِ) ও আলহামদুলিল্লাহ (الْحَمْدُ لِلَّهِ) আসমান ও জমিনের মধ্যবর্তী স্থানকে পরিপূর্ণ করে দেবে।
নামাজ হচ্ছে একটি উজ্জ্বল জ্যোতি। সাদকা হচ্ছে (ঈমানের) নিদর্শন। সবর বা ধৈর্য হচ্ছে জ্যোতির্ময়। আর আল-কোরআন হবে তোমার পক্ষে অথবা বিপক্ষে দলিল প্রমাণ স্বরূপ। বস্তুত সব মানুষই প্রত্যেক ভোরে নিজেকে আমলের বিনিময় বিক্রি করে দেয়। তার আমল দ্বারা নিজেকে (আল্লাহর আজাব থেকে) মুক্ত করে অথবা তার নিজের ধ্বংস সাধন করে। (মুসলিম)

শুধু তা-ই নয়
‘সুবহানাল্লাহ’ ও ‘আল্লাহু আকবার’, জিকিরকারীর হৃদয়কে আল্লাহর পবিত্রতা ও শ্রেষ্ঠত্বের অনুভূতিতে ভরে দেবে। পৃথিবীতে অন্য কারোর মহত্ত্ব, শক্তি বা বড়ত্ব তাঁকে প্রভাবিত করবে না। সব ভয় ও হীনমন্যতার অনুভূতি থেকে এই হৃদয় পবিত্র হবে। তবেই মুমিনের হৃদয় হবে ভারমুক্ত, গ্লানিমুক্ত, শক্তিশালী এবং আল্লাহর রহমত, নেয়ামত ও বরকতে পরিপূর্ণ।

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, নিজেদের মনকে কৃতজ্ঞতা দিয়ে আবাদ করা। জিকিরের দ্বারা সব কষ্ট, বেদনা, ব্যর্থতা ও উৎকণ্ঠা থেকে মনকে সাফ করা। আল্লাহর অশেষ নেয়ামতের কথা স্মরণ করে এগুলোর জন্য কৃতজ্ঞতার অনুভূতি দিয়ে হৃদয়কে ভরে দেওয়া। অবিরত কৃতজ্ঞ চিত্তে শুকরিয়া আদায়ে ‘আল-হামদুলিল্লাহ’র জিকির করা।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সব সময় ‘সুবহানাল্লাহ-আল-হামদুল্লিাহ’র জিকির করার তাওফিক দান করুন। হাদিসের আলোকে জিকিরের যথাযথ আমল করে হৃদয়কে ভারমুক্ত, গ্লানিমুক্ত, শক্তিশালী এবং আল্লাহর রহমত, নেয়ামত ও বরকতে পরিপূর্ণ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

We will be happy to hear your thoughts

Leave a reply